জামরুল

ভুমিকা

Description: /docsdb/jamrul_files/image001.jpg

জামরুল বাংলাদেশে অপ্রধান ফলের মধ্যে টি অন্যতম ফল। গ্রীস্ম কালে বাংলাদেশে জামরুল পাওয়া যায়। এটি একটি ভিটামিন বিসমৃদ্ধ ফল।

জাত

 

ক)           বারি জামরুল - :

জাতটি প্রতি বছর ফল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। মাঘ থেকে চৈত্র মাসে গাছে ফুল আসে এবং চৈত্র থেকে জৈষ্ঠ্য মাস পর্যন্ত পাকা ফল পাওয়া যায়। ফল চুঙ্গাকৃতির। ফলের গড় ওজন ৩৪-৪৫ গ্রাম। ফলের শাঁস সবুজাভ সাদা। প্রায় আঁশহীন মিষ্টি মধ্যম রসালো। জাতটি সারাদেশে চাষ উপযোগী। ফলের রং মেরুন বর্ণের। পাকা ফল দেখতে আকর্ষণীয়।

 

খ)    বাউ জামরুল - (নাসপাতি জামরুল):

প্রতি বছর ফল ধরে। সাধারণত: ফাল্গুন থেকে চৈত্র মাসে গাছে ফল ধরে থাকে এবং জৈষ্ঠ্য আষাঢ় মাসে গাছে পাকা ফল পাওয়া যায়। ফল নাসপাতি আকৃতির মত j¤^v‡U হয়ে থাকে। অপরিপক্ক ফলের রং সবুজাভ সাদা। পাকা ফলের রং হলুদের উপর গোলাপী রেখাযুক্ত। ফলের গড় ওজন ৪০-৪৫ গ্রাম। মিষ্টি, রসালো my¯^v`y| সারা দেশে চাষ উপযোগী একটি জাত।

গ)    বাউ জামরুল - (আপেল জামরুল):

জাতটি প্রতি বছর ফল ধরে থাকে। মাঘ থেকে চৈত্র মাসে গাছে ফুল আসে এবং চৈত্র থেকে জৈষ্ঠ্য মাস পর্যন্ত পাকা ফল পাওয়া যায়। ফল চুঙ্গাকৃতির। ফলের গড় ওজন ৩৫-৪৫ গ্রাম। ফলের শাঁস সবুজাভ সাদা। প্রায় আঁশহীন মিষ্টি মধ্যম রসালো। জাতটি সারাদেশে চাষ উপযোগী। পাকা ফলের রং গাঢ় মেরুন বর্ণের বা পাকা আপেলের মত টক টকে লাল। পাকা ফল দেখতে আকর্ষণীয় my¯^v`y|

চারা তৈরী

সাধারণত: গুটি কলমের মাধ্যমে জামরুলের বংশ বিস্তার করা হয়ে থাকে। বৈশাখ হতে আষাঢ় মাস পর্যন্ত গুটি কলম তৈরীর উপযুক্ত সময়।

চারা রোপন

জৈষ্ঠ্য আষাঢ় মাসে মুল জমিতে চারা রোপন করতে হয়। চারা রোপনের আগে জমিটি ভালভাবে চাষ মই দিয়ে আগাছা মুক্ত করতে হবে। থেকে মিটার দুরে দুরে মিটার X মিটার X মিটার  আকারে মাদা তৈরী করতে হবে। মাদা প্রতি ২০-২৫ গ্রাম পঁচা গোবর, ৫০০ গ্রাম টিএসপি ৫০০ গ্রাম এমওফিল সার মিশিয়ে ১৫ দিন পর গর্তের মাঝে চারা রোপন করতে হবে। চারা রোপনের পর সেচ, খুটি বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সার প্রয়োগ

গাছ রোপনের পর প্রতি বছর গাছে খাবার হিসেবে সার প্রয়োগ করতে হবে। সারের মাত্রা গাছের বয়সের সাথে পরিবর্তন হয়ে থাকে। নিম্নের ছকে বয়স অনুযায়ী সারের মাত্রা দেওয়া হলো।

 

গাছের বয়স  (বছর)

গোবর / কম্পোষ্ট সার (কেজি)

ইউরিয়া  (গ্রাম)

টি এস পি (গ্রাম)

এমওপি (গ্রাম)

-

১৫-২০০

২০০-২৫০

২০০-২৫০

২০০-২৫০

৪-৭

৪৫-৬০

৬০০-৭৫০

৬০০-৭৫০

৬০০-৭৫০

৮-১০

৭০-৮০

৮০০-১০০০

৮০০-১০০০

৮০০-১০০০

 সব টুকু সার  সমান ভাগে ভাগ করে অর্ধেক বৈশাখ থেকে আষাঢ় এবং আশ্বির্ণ থেকে কার্তিক মাসে প্রয়োগ করতে হবে।  সার ছিটিয়ে / গাছের চার দিকে বৃত্তাকার নালা করে প্রয়োগ করতে হবে।

পরিচর্যা

বছরে বার গাছের গোড়ার মাটি হালকা ভাবে কুপিয়ে দিতে হবে। কলমের গাছের নিচের দিকে কিছু শাখা প্রশাখা কেটে দিতে হবে। এছাড়াও ফল আসার পরে কিছু কিছু ভাঙ্গা ডাল থাকলে সেগুলোসহ দুর্বল রোগাক্রান্ত ডালগুলো কেটে হালকা করে দিতে হবে। খরা মৌসুমে গাছে ২-৩ সেচ দিলে ভাল ফল পাওয়া যায়্‌।

আমড়া

ভুমিকা

আমড়া একটি ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ফল। আর্শ্বিন ও কার্তি মাসে বাংলাদেশে পাকা আমড়া পাওয়া যায়। তবে আজ কাল বারমাস ফলন দেয় এমন জাতও আছে। ভাল জাতের আমড়া আমাদের দেশে বিলাতী বা বারিশালী আমড়া নামে পরিচিত। এটি মহিলা ও শিশুদের নিকট অতি প্রিয় ফল। আমড়া থেকে উন্নত মানের চাটনী ও আচার তৈরী করা যায়।

মাটি

গভীর সুনিস্কাশিত, উবর্রর দোঁ-আশ মাটি আমড়া চাষের জন্য উপযুক্ত।

জমি নির্বাচন

আমড়া চাষের জন্য বন্যা মুক্ত উচু থেকে মাঝারী উচু জমি নির্বাচন করতে হয়।

চারা তৈরী

সাধারণত: বীজ থেকে চারা তৈরী করা হয়। তবে আজকাল ফাটল জোড় কলমের মাধ্যমে কলম তৈরীর পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

রোপন পদ্ধতি সময়

বর্গাকার বা ষঢ়ভূজী পদ্ধতি আমড়া চাষের জন্য উপযুক্ত। জৈষ্ঠ্য থেকে আর্শ্বিন মাস চারা রোপনের উপযুক্ত সময়।

মাদা তৈরী সার প্রয়োগ

সাধারণত: ১ মি: X ১ মি: X ১ মি: আকারের মাদা তৈরী করতে হবে। মাদা প্রতি পঁচা গোবর সার ১০ কেজি, টিএসপি সার ২০০ গ্রাম ও এমওপি সার ২০০ গ্রাম মিশিয়ে মাদা তৈরী করতে হবে।

চারা রোপন

মাদা তৈরীর ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর মাদার মাঝখানে ১টি সুস্থ্য সবল চারা / কলম রোপন করতে হবে। চারা রোপনের পর গাছের গোড়ায় পানি, খুটি ও ঘেড়া বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

 

গাছের বয়স অনুযায়ী সার প্রয়োগ ঃ

গাছের বয়স

জৈব সার (কেজি)

ইউরিয়া (গ্রাম)

টিএসপি (গ্রাম)

এমওপি (গ্রাম)

১ - ২ বছর

১০

১০০

১৫০

১০০

৩ - ৪ বছর

১৫

১৫০

২০০

১৫০

৫ - ৬ বছর

২০

২০০

২৫০

২০০

৭ - ১০ বছর

২৫

২৫০

৩০০

২৫০

১১ বছর বা তদুর্ধ

৩০

৩০০

৩৫০

৩০০

 

বারমাসি আমড়া জাতে  সার প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরী। বছরে চার বারে যথাক্রমে বৈশাখ, আষাঢ়, আর্শ্বিণ ও অগ্রহায়ন মাসে উপরোক্ত মাত্রা অনুযায়ী সার গাছে প্রয়োগ করতে হবে।

পানি সেচ

খরা বা শুকনা মৌসুমে কমপক্ষে দুইবার সেচ প্রদান করতে হবে। প্রতিবার সার প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিতে হবে। গাছে ফুল আসার সময় এবং ফল মটর দানার আকার ধারণ করলে মাটিতে জোঅবশ্যই সেচ ব্যবহার করতে হবে।

ডাল ছাটাই

বামান আকৃতির জাতের ক্ষেত্রে মুল কান্ড দৈর্ঘ ৭৫ সে: মি: j¤^v না হওয়া পর্যন্ত চারিদিকে গজানো সকল ডাল গুলো কেটে ফেলতে হবে। j¤^v জাতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মরা ও রোগাক্রান্ত ডালগুলো ছাটাই করতে হবে।

বালাই ব্যবস্থাপনা

বিটল পোকা :

গাছে যখন কচি পাতা আসে তখন বিটল পোকার আক্রমণের ব্যপকতা বারে। বিটল পোকার গ্রাবগুলো হলুদ বর্ণের। আক্রমণ বেশী হলে গাছের সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ঝাজরা করে ফেলে। সাধারণত: এপ্রিল হতে আগষ্ট মাস পর্যন্ত এ পোকার প্রাদুর্ভাব বেশী থাকে।

রোগ বালাই প্রতিকার

 

·   পোকার সংখ্যা সংখ্যা কম হলে হাত বাছাই করে মারতে হবে;

·   গাছের নিচে  ঝড়ে পরা মরা পাতা ও আবর্জনা আগুনের পুড়িয়ে নষ্ট করতে হবে।

·   সুমিথিয়ন বা ম্যালাথিয়ন প্রতি লিটার পানিতে ২ মি:লি: হারে মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে প্রয়োগ করতে হবে।

 

এনথ্রাকনোজঃ

এ রোগের আক্রমণে পাতা ও ফলে কালচে-বাদামী দাগ দেখা দেয়। পাতা আস্তে আস্তে মরে যায়, কাচি ফল ঝরে যেতে পারে এবং আক্রমণ বেশী হলে গাছটি মারাও যেতে পারে।

 

প্রতিকারঃ

টিল্ট ২৫০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মি:লি: মিশিয়ে সেপ্র করলে এ রোগ দমন করা যায়।

 

টব/ অর্ধড্রামে জামরুল / আমড়ার চাষঃ

 

K)      প্রথমে টবের তলায় ১ ইঞ্চি পরিমাণ ইটের োয়া, পচাঁ পাতা এবং খড় বিছিয়ে দিতে হবে।

L)       পুরো টব বা ড্রামটি সমপরিমান পচাঁ গোবর ও দোআঁশ মাটির মিশ্রন দিয়ে ভরে দিতে হবে।

M)      এবার টবের মাঝ খানে একটি সুস্থ্য ও সবল কলম রোপন করতে হবে। এ জন্য কোন প্রকার রাসায়নিক সারের দরকার নাই।

N)     তবে গাছের কচি পাতা বের হয়ে তা পরিপক্ক হলে ২-৩ টি সিলভা মিক্স ট্যাবলেট সার গাছের গোড়া হতে ৫-৭ সে.মি. দুরে ৫-৭ সে.মি. মাটির গভীরে পুতে দিতে হবে।

O)     গাছের প্রয়োজন অনুসারে সেচ ও নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হবে।