আলু

আলুর পরিচিতি

বাংলা নামঃ আলু
ইংরেজী নামঃ Potato
বৈজ্ঞানিক নামঃ Solanum tuberosum
পরিবারঃ Solanaceae
আলু বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ন ফসল ধান গমের পরই আলুর স্থান ১৯৬০ সাল হতে বিদেশের উন্নত জাতের আলু বাংলাদেশে চাষাবাদ হচ্ছে আমাদের দেশে বছরে মাথাপিছু প্রায় ১৩.৩০ কেজি আলু সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে দেশের মোট উৎপাদিত আলুর ৪০ ভাগই মুন্সিগঞ্জ জেলাতে হয়ে থাকে ছাড়াও চাঁদপুর, কুমিল্লা, বগুড়া এবং যশোর জেলাতে ব্যাপক আলূ চাষ হয়ে থাকে

আলুর জাত

বারি আলু- (হীরা):
আলু চ্যাপ্টা গোলাকার আকার মাঝারী থেকে বড় ত্বক মসৃন, রং হালকা হলুদ, শাঁসের রং ক্রীম সাদা মিশানো চোখ কিঞ্চিত গভীর সংখ্যা বেশী জীবনকাল ৮০ দিন, তবে ৬০-৬৫ দিন  থেকেই আগাম আলু উত্তোলন করা যায় ফলন হেক্টর প্রতি ২৫-৪০ টন

বারি আলু- (আইলসা):
 
আলু  ডিম্বাকারমাঝারী অকৃতির, ত্বক অমসৃন হালকা হলদে, শাঁস ফেকাসে চোখগুলো অগভীর  হেক্টর পতি ফলণ ২৫-৩০ টন

বারি আলু- (মুল্টা):
আলু মাঝারি  আকারের ডিম্বাকৃতি জাতের আলুর ত্বক শাঁস ফেকাসে হলুদ বর্নের জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয় কিছুটা ক্ষরা শহনশীল জাত জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২০-৩৫ টন

বারি আলু- (ডায়ামন্ড):  উচ্চ ফলনশীল নাবিজাত ডিম্বাকৃতি জাতের আলুর ত্বক মসৃন হলুদ বর্নের, শাঁষ ফেকাসে হলুদ বর্নের জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয় জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২৫-৪০ টন
বারি আলু- (কার্ডিনাল):  উচ্চ ফলনশীল নাবিজাত ডিম্বাকৃতি জাতের আলুর ত্বক লাল, শাঁষ ফেকাসে হলুদ বর্নের জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয় জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২৫-৪০ টন
বারি আলু- (মন্ডিয়াল):   লম্বাকার, আকৃতি বড়, ত্বক মসৃন হালকা হলুদ বর্ণ  শাঁষ ফেকাসে হলুদ বর্নের জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয় জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২৫-৪০ টন

বারি আলু-১০ (কুপরী সুন্দরী):  মধ্যম হতে নাবী জাত আলু গোলাকৃতি, মাঝারী আকার, ত্বক মসৃন লাল বর্ণ শাঁস ফেকাসে হলুদ , চোখগুলো গভীর নয় জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২০-৩০ টন

বারি আলু-১১ (চমক) আলু ডিম্বাকারমাঝারী আকার, ত্বক মসৃন হালকা হলুদ  বর্ণ চোখগুলো গভীর নয় জীবনকাল ৯৫-১০০ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২০-৩৫ টন

বারি আলু-১২ (ধীরা):  আলু ডিম্বাকার, মাঝারী আকার, ত্বক মসৃন হালকা হলুদ  বর্ণ, শাঁসের রং ফেকাসে হলুদ চোখগুলো কিঞ্চিত গভীর প্রান- ভাগে চোখের সংখ্যা বেশী জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২০-৩৫ টন

বারি আলু-১৩ (গ্রানোলা):   আলু গোল-ডিম্বাকারমাঝারী আকার, ত্বক অমসৃন হালকা তামাটে হলুদ বর্ণ, শাঁসের রং ফেকাসে হলুদ চোখগুলো অগভীর আলুতে শর্করা বেশী জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২০-৩০ টন

বারি আলু-১৪ (ক্লিওপ্যাট্রা):  আলু  ডিম্বাকারমাঝারী থেকে বড় আকার, ত্বক অমসৃন গাঢ় লাল বর্ণ, শাঁসের রং ফেকাসে হলুদ চোখগুলো অগভীর  জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ২৫-৩০ টন


বারি আলু-১৫ (বিনেলা):  আলু  ডিম্বাকারমাঝারী অকৃতির, ত্বক মসৃন হালকা হলদে, শাঁসের রং হলুদ চোখগুলো অগভীর  জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন হেক্টর পতি ফলণ ৩০-৩৫ টন

মাটি জমি তৈরী

বেলে দো-আঁশ হতে দো-আঁশ মাটি আলূ চাষের জন্য উপযোগী জমি গভীর ঝুরঝুরে করে চাষ দিয়ে তৈরী করতে হবে

আলু বপনের সময় বীজের হার

বপনের সময়ঃ

দেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ এবং দক্ষিনাঞ্চল নভেম্বরের মাঝামাঝি হতে শেষ সপ্তাহ পর্যন- আলু রোপণের উপযুক্ত সময়

বীজের হারঃ
হেক্টর প্রতি বীজের পরিমান .৫০ টন রোপণের দুরত্ব ৬০ ৩০ সেমি (আস- আলু) এবং ৪৫ ১৫ সেমি (কাটা আলু)

পরিচিতি

ইংরেজী নামঃ Potato

বৈজ্ঞানিক নামঃ Solanum tuberosum

পরিবারঃ Solanaceae

Description: http://www.krishibangla.com/mediafile/1%284%29.jpg

আলু বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ন ফসল। ধান ও গমের পরই আলুর স্থান। ১৯৬০ সাল হতে বিদেশের উন্নত জাতের আলু বাংলাদেশে চাষাবাদ হচ্ছে। আমাদের দেশে বছরে মাথাপিছু প্রায় ১৩.৩০ কেজি আলু সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। দেশের মোট উৎপাদিত আলুর ৪০ ভাগই মুনিাসগঞ্জ জেলাতে হয়ে থাকে। এ ছাড়াও চাঁদপুর, কুমিল্লা, বগুড়া এবং যশোর জেলাতে ব্যাপক আলূ চাষ হয়ে থাকে।

জাত

বারি আলু-১ (হীরা): আলু চ্যাপ্টা গোলাকার। আকার মাঝারী থেকে বড়। ত্বক মসৃন, রং হালকা হলুদ, শাঁসের রং ক্রীম ও সাদা মিশানো। চোখ কিঞ্চিত গভীর ও সংখ্যা বেশী। জীবনকাল ৮০ দিন, তবে ৬০-৬৫ দিন  থেকেই আগাম আলু উত্তোলন করা যায়। ফলন হেক্টর প্রতি ২৫-৪০ টন।

বারি আলু-৪ (আইলসা) : আলু ডিম্বাকার মাঝারী আকৃতির, ত্বক অমসৃন ও হালকা হলদে, শাঁস ফেকাসে। চোখগুলো অগভীর।  হেক্টর প্রতি ফলণ ২৫-৩০ টন।

বারি আলু-৬ (মুল্টা) : আলু মাঝারি  আকারের। ডিম্বাকার এ জাতের আলুর ত্বক ও শাঁস ফেকাসে হলুদ বর্নের। এ জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয়। কিছুটা ক্ষরা শহনশীল জাত। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন। হেক্টর প্রতি ফলণ ২০-৩৫ টন।

বারি আলু-৭ (ডায়ামন্ড) : উচ্চ ফলনশীল নাবিজাত। ডিম্বাকারএ জাতের আলুর ত্বক মসৃন ও হলুদ বর্নের, শাঁষ ফেকাসে হলুদ বর্নের। এ জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয়। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২৫-৪০ টন।

Description: http://www.krishibangla.com/mediafile/2%284%29.jpg

বারি আলু-৮ (কার্ডিনাল) :  উচ্চ ফলনশীল নাবিজাত। ডিম্বাকার এ জাতের আলুর ত্বক লাল, শাঁষ ফেকাসে হলুদ বর্নের। এ জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয়। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২৫-৪০ টন।

Description: http://www.krishibangla.com/mediafile/3%284%29.jpg

বারি আলু-৯ (মন্ডিয়াল) : লম্বাকৃতি আকৃতি বড়, ত্বক মসৃন ও হালকা হলুদ বর্ণ।  শাঁষ ফেকাসে হলুদ বর্নের। এ জাতের আলুর চোখগুলো গভীর নয়। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২৫-৪০ টন।

বারি আলু-১০ (কুপরী সুন্দরী) : মধ্যম হতে নাবী জাত। আলু গোলাকৃতি, মাঝারী আকার, ত্বক মসৃন ও লাল বর্ণ। শাঁস ফেকাসে হলুদ , চোখগুলো গভীর নয়। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২০-৩০ টন।

বারি আলু-১১ (চমক) : আলু ডিম্বাকার,  মাঝারী আকার, ত্বক মসৃন ও হালকা হলুদ  বর্ণ। চোখগুলো গভীর নয়। জীবনকাল ৯৫-১০০ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২০-৩৫ টন।

বারি আলু-১২ (ধীরা) : আলু ডিম্বাকার, মাঝারী আকার, ত্বক মসৃন ও হালকা হলুদ  বর্ণ, শাঁসের রং ফেকাসে হলুদ। চোখগুলো কিঞ্চিত গভীর । প্রান্ত ভাগে চোখের সংখ্যা বেশী। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২০-৩৫ টন।

বারি আলু-১৩ (গ্রানোলা) : আলু গোল-ডিম্বাকার  মাঝারী আকার, ত্বক অমসৃন ও হালকা তামাটে হলুদ বর্ণ, শাঁসের রং ফেকাসে হলুদ। চোখগুলো অগভীর । আলুতে শর্করা বেশী। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২০-৩০ টন।

বারি আলু-১৪ (ক্লিওপ্যাট্রা) : আলু  ডিম্বাকার,  মাঝারী থেকে বড় আকার, ত্বক অমসৃন ও গাঢ় লাল বর্ণ, শাঁসের রং ফেকাসে হলুদ। চোখগুলো অগভীর।  জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ২৫-৩০ টন।

বারি আলু-১৫ (বিনেলা) : আলু ডিম্বাকার মাঝারী অকৃতির, ত্বক মসৃন ও হালকা হলদে, শাঁসের রং হলুদ। চোখগুলো অগভীর।  জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন । হেক্টর প্রতি ফলণ ৩০-৩৫ টন।

হীরা বীজ আলু- ডায়ামন্ডঃ হল্যান্ড থেকে আমদানীকৃত উচ্চ ফলনশীল হালকা লম্বাটে গোলাকৃতির সাদা আলু, রোগ সহনশীল। রোপনের সময় মধ্য কার্তিক হতে মধ্য অগ্রহায়ন। জীবনকাল ৯০ - ১০০ দিন। বীজের হার ৬৫০ - ৭০০ কেজি/হেক্টর। ফলন একর প্রতি ৯-১০ টন।

হীরা বীজ আলু - গ্রানুলাঃ  হল্যান্ড থেকে আমদানীকৃত উচ্চ ফলনশীল গোলাকৃতির সাদা আলু, রোগ সহনশীল। রোপনের সময় মধ্য কার্তিক হতে মধ্য অগ্রহায়ন। জীবনকাল ৯০ - ১০০ দিন। বীজের হার ৬৫০ - ৭০০ কেজি/হেক্টর। ফলন একর প্রতি ১০ - ১১ টন।

এ ছাড়াও ব্রাক সীড এন্টারপ্রাইজের টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে উৎপাদিত ডায়ামান্ট, গ্রানোলা, এস্টারিক্স এবং ফেলসিনা অন্যতম।

 

মাটি

বেলে দো-আঁশ হতে দো-আঁশ মাটি আলূ চাষের জন্য উপযোগী।

বপনের সময়

দেশের উত্তরাঞ্চলের জন্য b‡f¤^‡ii প্রথম সপ্তাহ এবং দক্ষিনাঞ্চল b‡f¤^‡ii মাঝামাঝি হতে শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত আলু রোপণের উপযুক্ত সময়।

বীজের হার

হেক্টর প্রতি বীজের পরিমান ১.৫০ টন। রোপণের দুরত্ব ৬০ x ৩০ সেমি (আস্ত আলু) এবং ৪৫ x ১৫ সেমি (কাটা আলু)। জমি গভীর ও ঝুরঝুরে করে চাষ দিয়ে তৈরী করতে হবে।

সারের পরিমাণ

 

সারের নাম

পরিমাণ  

(কেজি/হেক্টর)

জমি তৈরীতে প্রয়োগ

উপরি প্রয়োগ (২য় বার মাটি তোরার সময় অর্থাৎ রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর)

মন্তব্য

গোবর

৮০০০-১০০০০

সম্পূর্ন

-

প্রাথমিক সার বীজের লাইনের উভয় পাশ্বে ২-৩ সেমি দুরে লাইন টেনে দেয়া ভাল। লক্ষ রাখতে হবে সার বিশেষ করে ইউরিয়া যেন বীজের গায়ে না লাগে, কারন এতে বীজে পঁচন লাগতে পারে।

ইউরিয়া

২২০-২৫০

অর্ধেক

অর্ধেক

টিএসপি

১২০-১৫০

সম্পূর্ন

-

এমপি

২২০-২৫০

সম্পূর্ন

-

জিপসাম

১০০-১২০

সম্পূর্ন

-

জিংক সালফেট

৮-১০

সম্পূর্ন

-

ম্যাগনেসিয়াম সালফেট

( অম্লীয় বেলে মাটির জন্য)

৮০-১০০

সম্পূর্ন

-

বোরন ( বেলে মাটির জন্য)

৮-১০

সম্পূর্ন

-

 

 

 

 

 

 

সেচ প্রয়োগঃ আলু বীজ রোপনের ২০-২৫ দিনের মধ্যে ১ম সেচ ( স্টোলন বের হওয়ার সময়), ২য় সেচ রোপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে  (শুটি বের হওয়া পর্যন্ত), ৩য সেচ রোপনের ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে  (শুটির বৃদ্ধি)। তবে উত্তরাঞ্চলে ভাল ফলন পেতে হলে ৮-১০ দিন পর পর সেচ দিতে হবে।